রবিবার, ৮ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » প্রাথমিক | শিক্ষা | শিশু কর্ণার » ১৬২ উপজেলায় পৌঁছে গেছে প্রাথমিকের বই
১৬২ উপজেলায় পৌঁছে গেছে প্রাথমিকের বই
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হবে নতুন বই। এ লক্ষ্যে ছাপাখানাগুলো দিনরাত বই প্রস্তুতের কাজ করে চলছে। গত তিন সপ্তাহে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবই পাঠানো শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের ৩৪ জেলার ১৬২টি উপজেলায় প্রাথমিকের দেড় কোটি বই পৌঁছে গেছে। আরও দুই কোটি বই পথে রয়েছে। সে হিসাবে প্রাথমিকের ৩৫ শতাংশ বই পৌঁছে গেছে বলে জানা যায়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৩৬ কোটি বই ছাপানো হবে। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রায় ১০ কোটি ৫৪ লাখ বই ছাপানো হবে। মাধ্যমিকের বই রয়েছে প্রায় ২৪ কোটি ৪১ লাখ। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যের বই ছাপানোর জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, সারাদেশে এ পর্যন্ত ৩৪টি জেলার ১৬২টি উপজেলায় দেড় কোটির বেশি প্রাথমিকের পাঠ্যবই পৌঁছে গেছে। আরও প্রায় দুই কোটি বইয়ের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে, তা দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে। এর সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলায় প্রাক-প্রাথমিকের প্রায় এক কোটি বই পাঠানো হয়েছে।
বিভিন্ন প্রেসের বেশকিছু বইয়ের কাগজ নিম্নমানের শনাক্ত হওয়ায় সেগুলো বাতিল করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। এ কারণে প্রতিটি প্রেসের বইয়ের মান যাচাই-বাছাই করতে ডিপিই থেকে আলাদাভাবে তিন সদস্যের একটি করে টিম গঠন করা হবে। তারা সার্বক্ষণিক বই ছাপানোর কাজ মনিটরিং করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এম মনছুরুল আলম বলেন, ‘আগামী বছরের পাঠ্যবই উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৬২টি উপজেলায় প্রাথমিকের দেড় কোটির বেশি (এক কোটি ৬২ লাখ) বই চলে গেছে। আরও প্রায় দুই কোটি পথে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকটি প্রেসের তৈরি করা বইয়ের কাগজ নিম্নমানের শনাক্ত হয়েছে। সেসব বাতিল করে দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে নিম্নমানের পাঠ্যপুস্তক পাঠাতে না পারে, সেজন্য প্রতিটি প্রেসের জন্য তিন সদস্যের একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হচ্ছে। তারা ছাপাখানার কাজ মনিটরিং করবে।’
এদিকে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দিতে দিনরাত কাজ করছেন ছাপাখানার কর্মচারীরা। বই তৈরির পর ছাড়পত্র পাওয়ামাত্র জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিছু কিছু প্রেসে নিম্নমানের কাগজে বই তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একাধিক প্রেস মালিক জানান, দরপত্র চূড়ান্ত করতে দেরি হওয়ায় তাদের দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে। দরপত্র অনুযায়ী নির্ধারিত মানের কাগজ সংগ্রহ করা কিছুটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বেশি দামে হলেও কাগজ কিনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাঠ্যপুস্তকের কাজ শেষ করা হবে বলে তারা জানান।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র শাহা শনিবার বলেন, গত তিন সপ্তাহ থেকে প্রাথমিকের বই জেলা পর্যায়ে পাঠানো শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশ পাঠ্যপুস্তক চলে গেছে। মাধ্যমিকের বইও পাঠানো শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ভালো কাগজ না পাওয়ায় দু-একটি প্রেসে কাগজের মান ঠিক রাখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ অনুযায়ী আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান বলেন, ‘নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপানোর কোনো সুযোগ নেই। এজন্য এনসিটিবির ৪৫ জন কর্মকর্তা প্রেসগুলোতে মনিটরিং করছেন। আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে দেশের সব উপজেলায় ৩৬ কোটি বই পৌঁছে দেয়া হবে।’