শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Shikkha Bichitra
মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » বিশ্ববিদ্যালয় » বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় স্থান জাবি অধ্যাপক মামুন
প্রথম পাতা » বিশ্ববিদ্যালয় » বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় স্থান জাবি অধ্যাপক মামুন
৬৫২০৯ বার পঠিত
মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় স্থান জাবি অধ্যাপক মামুন

বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় স্থান জাবি অধ্যাপক মামুনবিশ্বের দুই শতাংশ বিজ্ঞানীদের ওপর পরিচালিত আমেরিকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে সেরাদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এ মামুন।

এর আগে বাংলাদেশে কর্মরত বিজ্ঞানীদের মধ্যে গুগল স্কলারসে ১২ হাজার ‘স্কলারস সাইটেশন’র মাইলফলক অতিক্রম করে দেশসেরা গবেষক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি। তার হাত ধরে বাংলাদেশের মাটিতে ডাস্টি ফিজিক্সের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে তার পিএইচডির থিসিস নিয়ে প্রায় ৫০০টির বেশি প্রবন্ধ লেখা হয়েছে। নিজে লিখেছেন প্রায় ৪১৪টি প্রবন্ধ।

গুগল স্কলারসের সাম্প্রতিক তথ্যমতে, ড. মামুনের সাইটেশন সংখ্যা ১৫ হাজারের কাছাকাছি। যা অন্যান্য গবেষকদের থেকে অনেক উপরে অবস্থান করছে। তার গবেষণাকর্মকে অন্যান্য গবেষকরা তাদের গবেষণায় তথ্য সূত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। দেশে এর আগে কখনও একজন গবেষকের গবেষণাপত্র থেকে এত বেশি তথ্য সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়নি। সেই দিক দিয়ে ড. মামুনের গবেষণাপত্র তথ্য সূত্রের ব্যবহারে শীর্ষে রয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের কোনো বিজ্ঞানীর গবেষণার সূত্র হিসেবে এত গুগল সাইটেশন হয়নি। বাংলাদেশে কর্মরত বিজ্ঞানীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কেউ ১২ হাজার সাইটেশন লাভ করেনি। যা এক অনন্য রেকর্ড। বর্তমানে তিনি পদার্থের চতুর্থ অবস্থা প্লাজমা ফিজিক্স নিয়ে কাজ করছেন।

ড. মামুন প্লাজমা ফিজিক্সে অবদানের জন্য জার্মান চ্যান্সেলর পুরস্কার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে একাধিকবার ‘বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স’ গোল্ড মেডেলসহ দেশ-বিদেশে নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়া লন্ডনের ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্স থেকে ডাস্টি প্লাজমা ফিজিক্সের ওপর যৌথভাবে প্রকাশিত হয়েছে ‘ইনট্রোডাকশন টু ডাস্টি প্লাজমা’।

আন্তর্জাতিক এই খ্যাতনামা গবেষক জাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে বিএসসি-এমএসসিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। এমএসসিতে সব বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। তার এমএসসির থিসিসের বিষয় ছিল ‘প্লাজমা ফিজিক্স’।

১৯৯৩ সালে জাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন তিনি। সে বছর কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে ব্রিটেনের সেন্ট অ্যান্ডুজ ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করতে যান। ফিজিক্যাল রিভিউ লেটারস, ফিজিক্যাল রিভিউ ই. ইউরোপিয়ান ফিজিকস লেটারের মতো নামকরা জার্নালে তার গবেষণাকর্ম প্রকাশিত হয় এবং এ গবেষণাকর্মের ভিত্তিতে প্লাজমা বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন জার্নালে ৫০০টিরও বেশি প্রবন্ধ লিখেছেন। দেশের সবচেয়ে বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে পরপর তিনবার দেশসেরা ও বর্ষসেরা গবেষক নির্বাচিত হন। বর্তমানে ড. মামুন জাবির সিনেট সদস্য ও ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

নানাবিধ অর্জনের ব্যাপারে অধ্যাপক ড. এ এ মামুন বলেন, তরুণ প্রজন্মের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণায় এগিয়ে আসতে হবে এবং বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যদি গবেষণা না করে, তাহলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক মানোন্নয়ন কোনো দিন ঘটবে না।

গবেষণা নিয়ে নিজের স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি বিজ্ঞান গবেষণায় তরুণ প্রজন্মের গবেষকদের উদ্বুদ্ধ করতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশ্বমানের গবেষণার পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রতি বছর স্বর্ণপদক পুরস্কারের কথা চিন্তা করছি। যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর কর্তৃক যে পদক পেয়েছি সেই পদকের অর্থ দিয়ে ‘এএ মামুন গোল্ড মেডেল’ দিতে চাই এবং মারা যাওয়ার আগেই এটা করে যেতে চাই।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সালেহ্‌ হাসান নকীব বলেন, রিসার্চ গেট, গুগল স্কলারসসহ বিভিন্ন গবেষণা পর্যবেক্ষণকারী তথ্যসূত্র অনুসারে অধ্যাপক এ এ মামুনই বাংলাদেশে কর্মরত বিজ্ঞানীদের মধ্যে সর্বাধিক সাইটেশনের অধিকারী। পদার্থবিজ্ঞান তো বটেই, অন্য কোনো ডিসিপ্লিনেও এত সংখ্যক সাইটেশনের অধিকারী কোনো বিজ্ঞানী আছেন বলে আমাদের জানা নেই।

বাংলাদেশের গবেষণা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী ম্যাগাজিন ‘সায়েন্টিফিক বাংলাদেশে’র প্রতিষ্ঠাতা মুনির উদ্দিন আহমেদ বলেন, গুগুল স্কলারসে দশ হাজার সাইটেশন একটি উল্লেখযোগ্য এবং উদযাপনযোগ্য মাইলফলক, বিশেষ করে একজন বাংলাদেশি গবেষকের জন্য। দশ হাজার সাইটেশনের মাইলফলক অতিক্রম করে ১৫ হাজারের ঘরে পৌঁছে বাংলাদেশি গবেষকদের সামনে তিনি এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। এই সাইটেশন সংখ্যা তার গবেষণার প্রাসঙ্গিকতা এবং প্রভাবকেই তুলে ধরে। বিগত বিশ বছরে এই অর্জন গবেষকদের গবেষণায় লেগে থাকতে এবং বৃহৎ লক্ষ্য অর্জনে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

এদিকে, সেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান লাভ করায় অধ্যাপক ড. এ এ মামুনকে অভিনন্দন জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যিালয়রে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণসংযোগ কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য বলেন, অধ্যাপক এ এ মামুনরে এ সম্মান বিশ্ববিদ্যালয়রে খ্যাতি ও সুনাম আরও বৃদ্ধি করছে। তাঁর এ গৌরবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঋদ্ধ হয়ছে। অভিনন্দন বার্তায় উপার্চায খ্যাতমিান বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এ এ মামুনের উত্তরোত্তর সাফল্য ও র্দীঘ কর্মময় জীবন কামনা করেন।



এ পাতার আরও খবর

ববি প্রশাসনের উদ্যোগ “আনফেয়ার গ্রেডিং” ববি প্রশাসনের উদ্যোগ “আনফেয়ার গ্রেডিং”
নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অগ্নিকাণ্ড নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অগ্নিকাণ্ড
বুয়েটে ভর্তির আবেদন শুরু, পরীক্ষা দুই ধাপে বুয়েটে ভর্তির আবেদন শুরু, পরীক্ষা দুই ধাপে
বহির্বিশ্বে বাউবির শিক্ষা কার্যক্রম: জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ বহির্বিশ্বে বাউবির শিক্ষা কার্যক্রম: জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব অর্থায়নে জোর দিতে বললেন শিক্ষা উপমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব অর্থায়নে জোর দিতে বললেন শিক্ষা উপমন্ত্রী
ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে: উপাচার্য ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে: উপাচার্য
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি আরেক দফা বাড়ছে, সেপ্টেম্বরে খোলার চিন্তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি আরেক দফা বাড়ছে, সেপ্টেম্বরে খোলার চিন্তা
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি করল আইইউবিএটি আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি করল আইইউবিএটি
১ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে ৭ কলেজের পরীক্ষা শুরু, রুটিন প্রকাশ ১ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে ৭ কলেজের পরীক্ষা শুরু, রুটিন প্রকাশ
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান বিডিইউ উপাচার্যের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান বিডিইউ উপাচার্যের

আর্কাইভ