শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Shikkha Bichitra
রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » Default Category | বিশ্ববিদ্যালয় | সাক্ষাৎকার » বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকার ও জনগণের সম্পদ - প্রফেসর মুহাম্মাদ আলী নকী, উপাচার্য, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি
প্রথম পাতা » Default Category | বিশ্ববিদ্যালয় | সাক্ষাৎকার » বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকার ও জনগণের সম্পদ - প্রফেসর মুহাম্মাদ আলী নকী, উপাচার্য, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি
৩৪৮২১১ বার পঠিত
রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকার ও জনগণের সম্পদ - প্রফেসর মুহাম্মাদ আলী নকী, উপাচার্য, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরকার ও জনগণের সম্পদ - প্রফেসর মুহাম্মাদ আলী নকী, উপাচার্য, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিআমাদের দেশে ছাত্র-শিক্ষককের যে সম্পর্ক তা অত্যন্ত চমৎকার এবং বিস্ময়কর। আপনি বাইরের দেশগুলোর দিকে তাকান, ছাত্ররা তাদের শিক্ষকদের নাম ধরে ডাকে। কিন্তু আপনি আপনার শিক্ষককে কখনোই নাম ধরে ডাকতে পারবেন না। শিক্ষকদের প্রতি ছাত্রদের এই যে শ্রদ্ধাবোধ, এটা কিন্তু আমাদের বৈশিষ্ট্য,আমাদের ঐতিহ্য, এটা আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি। কথাগুলো বলছিলেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি-র উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী। যিনি বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে আর্কিটেকচার-এ গ্র্যাজিউয়েট্ ডিগ্রি অর্জন করে ১৯৯১ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী ভালো ক্লাসিক্যাল বাশিঁ বাজাতেন পারেন। তিনি একজন ভালো দাবা ট্রেইনার। ছোট ছেলেমেয়েদের দাবা খেলা শিখান এবং দাবা খেলতে তিনি তাদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করেন এবং বিভিন্নভাবে তাদের অনুপ্রাণিত করে তোলেন। প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকীর নকশা করা খুলনায় প্রায় ১৫০/১৬০ বিল্ডিং রয়েছে। এছাড়া রাজধানী ঢাকাতেও একটি বিল্ডিং রয়েছে। সম্প্রতি তিনি শিক্ষাবিচিত্রাকে একটি মূল্যবান সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শিক্ষাবিচিত্রার প্রতিনিধি শান্ত সিং। সাক্ষাৎকারটির একাংশ এখানে তুলে ধরা হলো-

শিক্ষাবিচিত্রা: যেহেতু আপনি দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষকতা এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত, এই প্রক্ষাপটে শিক্ষাঙ্গন ঘিরে আপনার সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির কথা বললে খুশি হব।
প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী: আমি দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষকতা এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত রয়েছি। ১৯৯১ সালে আমি খুলনা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টে যোগদান করি। তখনো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়নি। আমি সেখানে ১৪তম শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাই। আমি যোগদান করার প্রায় ৩/৪ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। তখনই থেকেই আমি শিক্ষকতা এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত। অর্থাৎ কিভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলতে হবে, কিভাবে একটা ডিপার্টমেন্টকে দাঁড় করাতে হবে, কিভাবে একজন ছাত্রকে গড়ে তুলতে হবে ইত্যাদি বিষয়াবলি আমি তখন থেকেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অর্জন করেছি। যেহেতু সেটি একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি রাষ্টীয় দায়িত্ব পালন বরেছি। এরপর আমি ২০০৫ সালে ঢাকায় চলে আসি এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে যোগদান করি। এবছর আমি ভাইস- চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পাই। শিক্ষকতার শুরু থেকে এখন পযর্ন্ত আমি দুই ধরনের অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। অর্থাৎ একটি হচ্ছে ক্লাস রুমে এবং অন্যটি হলো শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত থেকে। শিক্ষকতা করতে গিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, আধুনিক শিক্ষা অর্জনের জন্য যে ধরনের প্রযুক্তি বা সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন সেটা আমাদের দেশে তেমন নেই। তবে বর্তমান সরকার একটি যুগান্তকারী প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। যার মধ্য দিয়ে আমাদের দেশে বিশেষ করে ইউনিভার্সিটিগুলোতে আধুনিক শিক্ষার বিপ্লব ঘটবে বলে আমি মনে করে। সেটা হলো বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় ইউজিসি-র মাধ্যমে Institutional Quality Assurance Cell Found Operations Manual (IQAC)। এটার মধ্য দিয়ে শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে যাবে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দেশে দক্ষ শিক্ষকের অভাব ছিল কিন্তু এই মাধ্যমে দেশেই আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক তৈরি হবে। আমার কথাই ধরুন সম্প্রতি আমার পদোন্নতি হয়েছে। আমার এই পদোন্নতির ক্ষেত্রে আমার কি কি যোগ্যতা দেখা হয়েছে? কত বছর কাজ করেছি, পেপার লিখেছি কিনা, ডিগ্রি রয়েছে কিনা ইত্যাদি। কিন্তু ক্লাসে আমি কি পড়িয়েছি, আমার ছাত্ররা প্রতিষ্ঠিত কিনা, বাইরে তারা কাছ পাচ্ছে কিনা, তাদের সাথে আমার সম্পর্ক ভালো কিনা-এই বিষয়গুলো কিন্তু বিবেচনায় নেয়া হয়নি। সেজন্য ভাইস-চ্যান্সেলর হওয়ার গর্ব আমি করছি না। এতো দিন বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর শিক্ষার মান নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল IQAC বাস্তবায়ন করা হলে সেই প্রশ্ন তোলার অবকাশ থাকবে না। এই প্রজেক্টের ফলে ছাত্রছাত্রীরা এখন শিক্ষককে মূল্যায়ন করবে। সেভাবে একজন শিক্ষককে গাইডলাইন দেওয়া হবে। সারা বছর কি পড়ানো হবে, কিভাবে পড়ানো হবে, সেগুলো ছাত্রদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। এতে করে শিক্ষার মান বাড়বে। কিন্তু দু:খজনক বিষয় হলো এতো বড়ো একটি বিপ্লব শুরু হয়েছে বা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে সেটা নিয়ে প্রচারনা নেই। অধিকাংশ মানুষ এটার সম্পর্কে অবগত নেই। IQAC এর ফলে ছাত্রদের মধ্য থেকে আউটকাম বেশি আসবে। এর বাস্তবায়ন ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা ম্যালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ যে কোন দেশর বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। আমার মতে, সৃজনশীল পদ্ধতিটা সবপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পযার্য়ে শুরু করলে ভালো হতো। এতে করে অনেক গ্র্যাজিউয়েট বের হতো। ফলে তারা অন্যদের ভালো করে শিখাতে পারত। কিন্তু সৃজনশীল পদ্ধতি শুরু করা হয়েছে ছোট ক্লাস থেকে। এতে সমস্যা হয়েছে কি যারা ছোটেদের সৃজনশীল শিখাবে তারাই এই সম্পর্কে ধারণা রাখে না। কিন্তু যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা যেত তাহলে শিক্ষকদের সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে সমম্যা হতো না। আমরা কি করি? ছাত্রদের খুটিয়ে খুটিয়ে প্রশ্ন করি। আমরা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করি যে, তুই কতো বড় বোকা। এজন্য যতক্ষণ পযর্ন্ত না সে আটকায় আমরা তাকে প্রশ্ন করে করে অপদস্থ করি। কোন ছাত্র উত্তর দিতে না পারলে আমরা তাকে ধমক দেই, বিভিন্ন প্রকার চাপ সৃষ্টি করি। এতে করে হয় কি, ঐ ছাত্র কখনো প্রশ্ন করবে না, সে কখনো উত্তরও দিতে চাইবে না। ছাত্রদের কখনো বোকা দেওয়া উচিত না। তাঁর জানার মধ্যে প্রশ্ন করতে হবে। আমি যদি একজনকে প্রশ্ন করি গোল পোস্টের মাপ কত? এটা কিন্তু সৃজনশীল প্রশ্ন নয়। যে গোল রক্ষক সেও এই মাপ জানে কিনা সন্দেহ। পৃথিবীর কোন মানুষই তাঁর কাছে গোল পোস্টের মাপ জানতে চাইবে না। এটা তাঁর জীবনে প্রয়োজনীয় নয়। তাকে প্রশ্ন করা যেতে পারে, আচ্ছা বলতো- ছোটদের জন্য ছোট গোল পোস্ট রাখা ভালো, নাকি বড় গোল পোস্ট রাখা ভালো? সে দু’ধরনের উত্তর দিতে পারে। সে বলতে পারে ছোটদের জন্য ছোট গোল পোস্টই রাখা ভালো। কারণ যেহেতু সে ছোট তাই বড় গোল পোস্ট সে কভার করতে পারবে না। আবার সে বলতে পারে না, ছোটদের খেলায়ও বড় গোল পোস্ট রাখা ভালো। ছোট গোল পোস্টে খেলতে খেলতে সে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। গোল খেলেও কোন অসুবিধা নেই কিন্তু সে বড় গোল পোস্টেই খেলা শিখুক, তাঁর সাহস বাড়ুক। এটা হলো সৃজনশীল প্রশ্ন-উত্তর। উত্তর সঠিক কিনা সেটা ব্যাপার না। উত্তরটা সৃজনশীল কিনা সেটা বড় ব্যাপার। তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। তারা যেমন আমাদের শ্রদ্ধা করে, তেমনি তাদেরকেও আমাদের শ্রদ্ধা করতে হবে। আপনি যদি বলেন ছাত্ররা নকল কেন করে? আমি বলব, আপনি প্রশ্ন করেন কেন? আপনি প্রশ্ন করবেন আর সেটা গোপন রাখবেন তাহলে তো তাদের মধ্যে কৌতুহল জাগবেই। কি প্রশ্ন হবে সেটা যেন ছাত্রদের জানা থাকে। পরীক্ষা শব্দটিতেই আমার আপত্তি আছে। এটা পরীক্ষা নয়, এটা নিরীক্ষা। শব্দটি নিরীক্ষণ হলে ভালো হতো। পরীক্ষা নেওয়া হয় একজন ছাত্রকে মূল্যায়ন করার জন্য। এখানে পাশ-ফেল বিষয় নয়। পরীক্ষা হলো You are testing by yourself. আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে রাজনীতি জ্ঞান ছাড়া একজন ভালো ছাত্র হতে পারে না। কারণ ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে ছাত্র সমাজ জড়িত। তবে অসুস্থ্য রাজনীতি হলে হবে না। রাজনীতি যাতে শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক না হয়।

আমাদের দেশে বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। আমরা বলি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি। ইউনিভার্সিটি কখনো প্রাইভেট হতে পারে না। আমি আমাদের রাষ্ট্রপতি এবং শিক্ষামন্ত্রীকে বলেছি, ইউনিভার্সিটি কখনো প্রাইভেট হতে পারে না। জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী স্যারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকেও এই কথা বলেছি। প্রাইভেট বলতে কি বুঝায়? ইউনিভার্সিটিটি একজন ব্যক্তির, যিনি সার্টিফিকেট দিবেন। আসলেই কি তাই! গাড়ি প্রাইভেট হতে পারে কিন্তু ইউনিভার্সিটি কখনো প্রাইভেট হতে পারে না। এটা বিশ্বের বিদ্যালয়, এটি জাতীয় সম্পদ, জনগনের সম্পদ। আকাশ, বৃষ্টি, মেঘ যেমন প্রাইভেট হতে পারে না তেমনি ইউনিভার্সিটি প্রাইভেট হতে পারে না। আসল কথা হলো সরকারের দায়িত্ব সবাইকে শিক্ষা দেওয়া। কিন্তু সরকারের একার পক্ষে কি তা সম্ভব? কখনোই সম্ভব নয়। এই জায়গায় কিছু ব্যক্তি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এগিয়ে আসে সরকারকে সহযোগিতা করতে। বে-সরকরি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো মূলত সরকারেরই সহযোগী প্রতিষ্ঠান। বে-সরকারি মানে তো বে-দরকারি নয়, সেটা দরকারি। একটি ট্রাস্টি বোর্ড কতৃক পরিচালিত হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ইউজিসি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সুতরাং বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্ব কোন অংশেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর থেকে কম নয়। বরং প্রাইভেট বলে সেটাকে অবমাননা করা হয়।

শিক্ষাবিচিত্রা: আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে বলবেন কি?
প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী:  ১৪ বিঘা জমির উপর স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ১৪ বিষয়ের উপর আমাদের স্নাতক রয়েছে। এছাড়া পাঁচটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয় রয়েছে। যেগুলো IBAকতৃক সনদ প্রাপ্ত। অর্থাৎ তাঁরা আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম, ল্যাব, আধুনিক যন্ত্রপাতি দেখে তাঁরা মূল্যায়ন দিয়েছে যে, আমরা ছাত্রদের যুগোপযোগী পরিবেশে তৈরি করছে। গণসংযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগটিও অনেক ভালো । আমাদের এখান থেকে যারা বেরিয়ে সাংবাদিকতা করছে, তারাই সবাই ভাল বরছে, এমনকি সাংবাদিকতায় তাদের অনেক সুনাম রয়েছে।

শিক্ষাবিচিত্রা:  শিক্ষার্থীদেরকে প্রদেয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এবং শিক্ষার মান সম্পর্কে জানালে খুশি হব।
প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী:  স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধাই দিয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো- স্টামফোর্ড খুব অল্প পরিমান টিউশন ফি নিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠার শুরুতে যে ফি নেওয়া হতো এখনো সেটাই রয়েছে। যেটা অন্য কোন বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।

শিক্ষাবিচিত্রা:  এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য বিশেষত্বের কথা জানতে চাই।
প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী:  স্টামফোর্ড- এর বিশেষত্ব হলো টাকা-পয়সার জন্য কারো পড়ালেখা থেমে থাকে না। শুরু থেকেই আমরা এটা করছি। কতটা সফল হয়েছি সেটা বলতে পারব না। তবে আমরা আন্তরিকভাবে সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। খুব সাধারণ ঘরের একজন শিক্ষার্থীও যাতে এখানে পড়াশুনা করতে পারে এই চিন্তা করে আমরা টিউশন ফি বাড়াইনি। কোন শিক্ষার্থী যদি সময় মতো টিউশন ফি পরিশোধ করতে নাও পারে তবুও আমরা তাকে রেজিস্টেশন করার সুযোগ দিই। প্রয়োজনে তাকে কয়েকভাগে ভাগ করে ফি পরিশোধ করার সুযোগ দিই। অনেক সময় সেটা ইউনিভার্সিটির জন্য ভালো হয় না কিন্তু আমরা চাই টাকা-পয়সার জন্য যেন ছাত্রদের পড়াশুনার কোন প্রকার ক্ষতি না হয়। আরেকটা বিশেষ দিক হলো, IQAC নামে যে প্রজেক্ট রয়েছে সেটার প্রথম ধাপ আমরা শেষ করেছি। আগামী চার বছর পর আমরা একটা দারুন আউটকাম পাব বলে প্রত্যাশা করছি।

শিক্ষাবিচিত্রা:  বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আপনার বিশেষ কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কিনা?
প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী:  পরিকল্পনা তো অবশ্যই আছে। আর সেটা হলো খুব শীঘ্রই আমরা আমাদের নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাব। প্রথমে আমরা তিন বিঘা জমিতে, পরে ছয় বিঘা জমিতে করে মোট নয় বিঘা জমিতে আমরা আমাদের ক্যাম্পাসে যাব। আর এ ব্যাপারে আমরা একেবারে চূড়ান্ত পর্যায় রয়েছি। তাছাড়া বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের জন্য আরো বেশি সুযোগ তৈরি করা যায় কিনা সেটার পরিকল্পনা করছি। আমাদের এখানে ৫০/৬০ জন সোমালিয়ান আছে। অন্যান্য দেশেরও আছে। তবে সোমালিয়ানরাই বেশি। ঢাকায় তাদের যে সমিতি রয়েছে সেটার সভাপতি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি। ইতিমধ্যে আমরা চাইনিজ জিয়াটং ইউনিভার্সিটি-র সাথে যৌথ চুক্তি করেছি। এই চুক্তির ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা স্টামফোর্ডে তিন বছর পড়াশুনা করার পর তারা জিয়াটং ইউনিভার্সিটি ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে এবং তারা ঐ ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট পাবে। পরবর্তিতে আমরা চাইনিজ সরকারের সাথে চুক্তি করার পরিকল্পনায় রয়েছি।

শিক্ষাবিচিত্রা: দেশের শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষার মান নিয়ে সুশীলসমাজ এবং শিক্ষাবিদদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় যা সরাসরি লক্ষ্য করা যায়। এর উত্তরণে আপনার পরামর্শ কী?
প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী: হ্যাঁ, শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, সেটা ঠিক। তবে সরকার ইউজিসি-র মাধ্যমে যে IQAC প্রজেক্ট নিয়েছে, সেটার মাধ্যমে সেই মানের প্রশ্ন দূর হবে বলে আমার বিশ্বাস। আর আমার পরামর্শ হলো অন্যান্য সব ইউনিভার্সিটিগুলোকে এই প্রজেক্টের আওতায় নিয়ে আসা হোক।

শিক্ষাবিচিত্রা:  দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকারত্বের হার ক্রমেই বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায়ও লেখালেখি হচ্ছে। আপনি কি বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত? কেন?
প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী:  শিক্ষিত বেকারত্বের হার বাড়ার কারণ হচ্ছে আমাদের আউটকাম শূণ্য। চাকরির বাজারে কি প্রয়োজন, চাকরিদাতারা কি চায় আমরা সেগুলো খেয়াল করছি না। আমরা যা পড়াচ্ছি সেটা কাজে দিচ্ছে না। সুতরাং মার্কেট কি চাহিদা, দাতারা কি চায় এই বিষয়গুলো ঠিক করে শিক্ষা দিলে আউটকাম ভালো আসবে এবং বেকারত্বের হার কমবে বলে আমি মনে করি।

শিক্ষাবিচিত্রা:  আপনাকে ধন্যবাদ।
প্রফেসর মুহাম্মদ আলী নকী:  শিক্ষাবিচিত্রাকেও ধন্যবাদ।



আর্কাইভ