শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » বিশ্ববিদ্যালয় » বিশ্বের সেরা ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই বাংলাদেশ, ভারতের আছে ৩৬, পাকিস্তানের ৭, শ্রীলঙ্কার ১
বিশ্বের সেরা ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই বাংলাদেশ, ভারতের আছে ৩৬, পাকিস্তানের ৭, শ্রীলঙ্কার ১
লন্ডনভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন প্রতি বছর বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং প্রকাশ করে। এ তালিকায় বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এক হাজারের পরে। এ তালিকায় ৯২টি দেশের ১৩ শ বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই এ তালিকাতে স্থান পেয়েছে।
র্যাংকিংয়ে শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণার সংখ্যা ও সুনাম, সাইটেশন বা গবেষণার উদ্ধৃতি, এ খাত থেকে আয় এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বা সংশ্লিষ্টতাসহ ৫টি মানদণ্ড বিশ্লেষণ করে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
র্যাংকিংয়ের তালিকায় বলা হয়েছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ১০৮ জন। প্রতি ১৫.৬ জন শিক্ষার্থীর জন্যে একজন কর্মী কাজ করেন। বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা শূন্য দেখানো হয়েছে। আবার ছাত্রী এবং ছাত্রের অনুপাত ৪২ : ৫৮। তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা ‘১০০১+’ দেখানো হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটি তালিকার প্রথম ১০০০ এর মধ্যে স্থান পায়নি।
২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিলো ৬ শ থেকে ৮ শর মধ্যে। তবে এর বছর দুই পরই এটির অবস্থান হঠাৎই নেমে যায়। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান গিয়ে দাঁড়ায় এক হাজারেরও পরে।
এ বছরই মে মাসে সাময়িকীটি এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল। সেই তালিকায় উল্লেখিত এশিয়ার ৪১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়েরও উল্লেখ ছিল না। সে সময় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার মান ও গবেষণার সুযোগ নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল। এর মধ্যে আগের বছরগুলোর তুলনায় গবেষণা, উদ্ধৃতি এবং আয়- এই তিনটি খাতে উন্নতি হলেও ২০১৬ সালের পর থেকে ব্যাপকহারে নেমে গেছে শিক্ষার পরিবেশের গ্রাফ চিত্র।
এদিকে, তালিকা লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশ ভালো করেছে।
এই তালিকায় তিন শ থেকে শুরু করে এক হাজারের মধ্যে রয়েছে ভারতের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এমনকি রাজনীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিতিশীল দেশ পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থানও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। তালিকায় এক হাজারের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে প্রথম ৫ শ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম ইউনিভার্সিটি।
এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে চীন এবং জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তালিকায় উঠে এসেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত ইরানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ও এ তালিকায় স্থান পেয়েছে। এদিকে, বরাবরের মতোই এই তালিকায় কর্তৃত্ব করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এ বছরের তালিকার প্রথম ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭টি-ই যুক্তরাষ্ট্রের। যার মধ্যে রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইয়েল ইউনিভার্সিটি। এছাড়া শ্রীলঙ্কা প্যারাজেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৪০০-৫০০ এর মধ্যে।
তবে চতুর্থবারের মতো এ বছরও তালিকায় প্রথম স্থানটি দখলে নিয়েছে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড। তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি। আর দশম স্থানে রয়েছে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন।
তালিকা নিয়ে এক বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে যে, যুক্তরাজ্যের কথিত ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ অর্থাৎ অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ এবং লন্ডন ইউনিভার্সিটি বরাবরের মতোই খুব ভালো করছে। তবে এর ফলে যুক্তরাজ্যের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুনাম ঢাকা পড়ে যাচ্ছে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
বলা হচ্ছে যে, জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যাপক হারে উন্নতি করছে। ২০১৬ সালের পর থেকে প্রথম ২০০টির মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৪টি থেকে কমে ২৮-এ নেমে এসেছে। কিন্তু এই তালিকায় জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা তিনটি থেকে বেড়ে ২৩টি হয়েছে।
টাইমস হায়ার এডুকেশনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এর মানে হচ্ছে জার্মানি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়িয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের গবেষণা অংশীদারিত্ব হারালে তহবিলের ক্ষেত্রে জার্মানির তুলনায় পিছিয়ে পড়তে পারে ব্রিটেন।
সূত্র: বিবিসি, টাইমস হায়ার এডুকেশন