শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Shikkha Bichitra
রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » Default Category | কলেজ » দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগ
প্রথম পাতা » Default Category | কলেজ » দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগ
২৫৪৭২৮ বার পঠিত
রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগ

দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগশিক্ষাবিচিত্রা ডেস্ক: শিক্ষাকে সহজলভ্য করতে গত এক দশকে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বিভিন্ন পর্যায়ে উপবৃত্তি ছাড়াও মেধাবৃত্তি ও মিডডে মিল চালু করেছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় এবার দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকে টিউশন ফি দিতে হবে না। সরকারই এ খরচ বহন করবে। প্রাথমিকভাবে ষষ্ঠ শ্রেণিতে এ সুযোগ দেয়া হবে।

এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে আগামী বছরেই। পরের বছর সিদ্ধান্তটি সপ্তম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করা হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রতি বছর একটি শ্রেণি অবৈতনিক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হবে। একই সাথে বাড়ানো হবে উপবৃত্তির পরিমাণ। বর্তমানে প্রতিটি শ্রেণিতে ৪০ শতাংশ উপবৃত্তির আওতায় থাকলেও তা বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ৬ অক্টোবর বৈঠক বসবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন সিনিয়র সচিব। ওই বৈঠকে সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচি এবং ষষ্ঠ শ্রেণিতে টিউশন ফি সুবিধা দেয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের ডাকা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার সুযোগ থাকলেও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি দিয়ে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় অবৈতনিক শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, যে পরিমাণ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে তাদের মধ্যে ১০ শতাংশ ছাত্র, বাকিরা ছাত্রী। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ শতাংশ ছাত্র এবং ৪৫ শতাংশ ছাত্রী উপবৃত্তি পাবে।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলে, প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক স্তরের মতো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া অবৈতনিক করতে চান। শিক্ষায় টেকসই উন্নয়ন, ভিশন-২০৩০ এবং ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যে ঝরেপড়া রোধ এবং মান অর্জনই অবৈতনিক শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য। এজন্যই পর্যায়ক্রমে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করতে চান তিনি (প্রধানমন্ত্রী)। এ লক্ষ্যেই প্রথম ধাপ হিসেবে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই ষষ্ঠ শ্রেণির লেখাপড়া অবৈতনিক করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (এসইডিপি) আওতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবৈতনিক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। প্রাথমিকভাবে ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা চালু করার চিন্তা ছিল। সে অনুযায়ী চলতি বছরই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের টিউশন ফি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করতে বিলম্বের কারণে এখন আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সেই হিসাবে ২০২৬ সালের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা চালু হবে।

সমন্বিত উপবৃত্তি এবং অবৈতনিক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা চালুর লক্ষ্যে সরকার ‘সমন্বিত উপবৃত্তি কার্যক্রম ও এসডিজি-৪ (শিক্ষায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা)’ শীর্ষক একটি কৌশলপত্র ইতোমধ্যে তৈরি করেছে। এতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষক দল বিস্তারিত প্রস্তাব তুলে ধরেছে। পাশাপাশি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পেছনের ব্যয় আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হয়। এরপর সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিভিত্তিক মোট কত টাকা সরকারকে ব্যয় করতে হবে সেটি বের করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্কুলের টিউশন ফি ও অন্যান্য ব্যয় হিসাবে আনা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত বাস্তবায়ন কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, অবৈতনিক শিক্ষার জন্য সরকারের দেয়া ফি প্রত্যেক স্কুল-মাদ্রাসা একই হারে টিউশন ফি নেবে। সেই ফির অর্থ সরকার শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠাবে। শিক্ষার্থীরা তা স্কুলে জমা দেবে। অথবা, ধার্য টিউশন ফি সরকার সরাসরি প্রতিষ্ঠানে পাঠাবে। সরকার ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১০০, সপ্তমে ১৫০ টাকা; অষ্টম শ্রেণি ২০০ টাকা; নবম ও দশম শ্রেণিতে যথাক্রমে ৩০০ ও ৫০০ টাকা করে টিউশন ফি দেয়ার চিন্তা করছে। এছাড়া একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ৫০০ টাকা প্রস্তাবিত টিউশন ফি। সেই হিসাবে আগামী বছর ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অবৈতনিক শিক্ষা চালু করতে গেলে সারা দেশে লাগবে ৪ কোটি ৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।

সরকার ইতোমধ্যে সম্ভাব্য শিক্ষার্থীর সংখ্যাও নিরূপণ করেছে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে (তিন শ্রেণিতে) ২০২১ সালে ৮০ লাখ ৪৪ হাজার ৬৭৩ জন এবং ২০২৫ সালে ৯০ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫০ জন লেখাপড়া করবে। অপরদিকে নবম-দশম শ্রেণিতে ২০২১ সালে শিক্ষার্থী হবে ৪৩ লাখ ৩৪ হাজার ১০৯ জন। ২০২১ সালে সারা দেশে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে সরকারের এ খাতে ব্যয় হতে পারে ৪৪ কোটি ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (নবম-দশম শ্রেণি) পেছনে ব্যয় হতে পরে ৩৪ কোটি ৯৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৬ সালে ১০ লাখ ১১ হাজার ৭৭৩ শিক্ষার্থী হবে। তাদের জন্য ব্যয় হবে ৮ কোটি ৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা।এসইডিপির প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাভেদ আহমেদ।

তিনি বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে অবৈতনিক শিক্ষা চালুর লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি পরিশোধ করার খাতে ইতোমধ্যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। সরকার চায় আগামী বছরই অবৈতনিক শিক্ষা কার্যকর হবে এবং কোনো শিক্ষার্থীকেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে টিউশন ফি (বেতন) দিতে না হয়। এজন্যই আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানসহ অংশীজনদের নিয়ে বসছি।



আর্কাইভ