রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » বিদেশে উচ্চশিক্ষা » বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কীভাবে বেছে নেব বিশ্ববিদ্যালয়
বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কীভাবে বেছে নেব বিশ্ববিদ্যালয়
আপনি যে দেশে পড়ার কথা ভাবছেন, সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কোনগুলো র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে আছে, তা যাচাই করে নিন। ইন্টারনেটে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিংয়ের জন্য বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে। (যেমন চীনের সাংহাই জিয়াওটং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত একাডেমিক র্যাঙ্কিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিস, যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান টাইমস হায়ার এডুকেশন বা টিএইচইর ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং এবং কিউ-এস নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের র্যাঙ্কিং। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন উপস্থিতি বা ওয়েবসাইট কতটা ভালো, তার ওপর নির্ভর করে করা হয় ওয়েবোমেট্রিক্স র্যাঙ্কিং এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস নিউজ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড রিপোর্টের র্যাঙ্কিংও আছে।) শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যাসহ বিভিন্ন মানের ওপর নির্ভর করে র্যাঙ্কিং করা হয়। আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিষয়ে ডিগ্রি অর্জনের জন্য যেতে চান, তার র্যাঙ্কিংয়ের দিকে খেয়াল রাখুন। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং হয়তো সামনের দিকে থাকে, কিন্তু আপনি যে বিষয়ে পড়বেন, তার অবস্থান পেছনে থাকতে পারে।
আবেদনের যোগ্যতা ও প্রক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ
সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে এখন আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়। আবেদনপত্রের সঙ্গে মোটিভেশন লেটার, রেকমেন্ডেশন লেটারসহ (সুপারিশপত্র) ভাষা দক্ষতার সনদ জমা দিতে হয়। দ্রুত ও সহজেই আবেদন করা যায়, ভর্তিপ্রক্রিয়ায় সময় কম লাগে, এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে রাখতে পারেন।
বৃত্তির যত সুযোগ
বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি সাধারণত একটু বেশি হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে পছন্দসই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমন বৃত্তির সুযোগ আছে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মেধাভিত্তিক বৃত্তির পাশাপাশি অন্যসব বৃত্তির খোঁজ নিন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট ও ভর্তি কার্যালয়ে ই–মেইল বা চিঠি লেখার মাধ্যমে বৃত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়।
কেমন ক্যাম্পাস
আমেরিকা, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরবর্তী ক্যাম্পাস থাকে। আপনার বিশ্ববিদ্যালয়টি কোন শহরে অবস্থিত, তার দূরবর্তী ক্যাম্পাস কোথায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনার আবাসন কত দূরে, এসব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মাথায় রাখা জরুরি। শহরকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে ব্যস্ততা যেমন বেশি থাকে, তেমনি কাজের চাপও অনেক। আবার এসব ক্যাম্পাসে পড়ার মাধ্যমে সেই দেশ ও শহরের সংস্কৃতিকে ভালো করে জানার সুযোগ পাওয়া যায়। তবে জীবনযাপনের খরচের দিকে খেয়াল রেখে বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করতে হবে।
অন্যান্য তহবিল বা আয়ের সুযোগ
আপনি বৃত্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেও খেয়াল রাখুন, অন্য কোনো উপায়ে তহবিল লাভের সুযোগ আছে কি না। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিযোগিতা, সম্মেলন কিংবা এক্সচেঞ্জ কর্মসূচির মাধ্যমেও তহবিল প্রাপ্তির সুযোগ থাকতে পারে। গবেষণার পাশাপাশি ক্যাম্পাসভিত্তিক কাজের কেমন সুযোগ আছে, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ থাকে। শিক্ষকের সহকারী বা গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ করেও আয় করা যায়, যা আপনার জীবনযাত্রাকে সহজ করবে।
আবহাওয়ার দিকে খেয়াল রাখুন
যে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করবেন, সেটি কোন এলাকাতে অবস্থিত? সেখানকার আবহাওয়া কেমন? বাংলাদেশ থেকে গিয়ে আপনি সেখানে মানিয়ে নিতে পারবেন তো? অতিরিক্ত শীত বা অতিরিক্ত গরমে আপনার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে কি না, তা আগেই বিবেচনা করুন।
পাঠ্যক্রমের ভাষা কী
কোন ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম পরিচালিত হয়, সে ভাষায় আপনার ভালো দখল আছে কি না, তা আগেই খেয়াল করুন। ইংরেজি ছাড়া অন্য কোনো ভাষা জানা থাকলে আপনি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন। আবার ভাষা না জানা থাকলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
কীভাবে জানব
সব তথ্যই পাবেন ইন্টারনেটে। ইন্টারনেট ঘেঁটে আপনি প্রয়োজনীয় তথ্যটা বের করতে জানেন কি না, সেটাও কিন্তু একটা যোগ্যতা বা দক্ষতা। সেই দক্ষতা গড়ে তুলতে হবে এখনই। এ ছাড়া আপনার কোনো শিক্ষক, কিংবা ভিনদেশে পড়ছেন, এমন পরিচিত কারও পরামর্শ নিতে পারেন। ঢাকার আমেরিকান সেন্টার, ব্রিটিশ কাউন্সিল, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, গ্যেটে ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক তথ্য ও পরামর্শ পেতে পারেন।