শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Shikkha Bichitra
সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » Default Category | ভ্রমন » রোমাঞ্চকর নীলগিরি
প্রথম পাতা » Default Category | ভ্রমন » রোমাঞ্চকর নীলগিরি
২০৮৯ বার পঠিত
সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

রোমাঞ্চকর নীলগিরি

রোমাঞ্চকর নীলগিরিট্রাভেল নিউজ বিডিঃ বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এ জেলায় রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র এর মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ২২০০ ফুট উপরে অবস্থিত এ ভ্রমণ স্পট টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত এবং পরিচালিত হয়। অপরূপ এ পর্যটন কেন্দ্র টি বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে কাফ্রুপাড়াসংলগ্ন পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত।এখানে রাত্রিযাপনসহ থাকা-খাওয়ার সু-ব্যবস্থাও রয়েছে। সেনা নিয়ন্ত্রিত নীলগিরি পর্যটন স্পটে গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক কটেজ। কটেজগুলোও দেখতে বেশ আকর্ষণীয়।

নীলগিরিতে যা দেখবেন

চারদিকে শুধু পাহাড় আর পাহাড়। দু চোখ যেদিকে যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। নীলগিরি যেন প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। যারা আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেন নীলগিরি তাদের জন্য এক চমৎকার জায়গা, যেখানে মেঘেরা আপনাকে নিত্ত ছুঁয়ে যাবে। শুষ্ক মৌসুমে এখানে থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। আর বর্ষা মৌসুমে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র থেকে মেঘ ছোয়ার দূর্লভ সুযোগ রয়েছে।

নীলগিরি বান্দরবান

নীলগিরি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যটন কেন্দ্র। নীলগিরির চূড়া থেকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং, প্রাকৃতিক বগালেক, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের আলো-আঁধারির খেলা, কক্সবাজারের সমুদ্র, এবং চোখ জুড়ানো পাহাড়ের সারিও দেখতে পাওয়া যায়।
নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র

এডভেঞ্চার প্রিয়দের জন্য রাতের নীলগিরি হতে পারে উৎকৃষ্ট স্থান। কারন রাতে চারিদিকের হরিণ, শিয়ালসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর ডাক আর পাহাড়গুলোর আলো-আঁধারির রহস্যময় খেলা দেখতে পাবেন।

বান্দরবানের উপর দিয়ে বয়ে চলা সর্পিল সাঙ্গু নদীর অপরূপ সৌন্দর্য এখান থেকে উপভোগ করা যায়। এ ছাড়া স্থানীয় উপজাতিদের জীবনধারা উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।

নীলগিরির কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান

বান্দরবানের নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রের কাছাকাছি আরও কিছু বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা যেকোনো পর্যটককে আকৃষ্ট করে। এর মধ্যে অন্যতম হল বান্দরবানের অপার সৌন্দর্যময় শৈলপ্রপাত যা নীলগিরি যাওয়ার পথে আপনি দেখে যেতে পারেন। এর পরই দেখা মিলবে আরেক চমৎকার জায়গা স্বপ্নচূড়া। বাংলার দার্জিলিং খ্যাত চিম্বুক পাহাড় রয়েছে এরপরেই।

যাতায়াত ব্যবস্থা

দেশের যে কোন জায়গা থেকে বান্দরবানের যাতায়াতব্যবস্থা অনেক ভাল। পর্যটকদের নীলগিরি যেতে হলে বান্দরবান এসে সেখান থেকে জেলা সদরের রুমা জীপষ্টেশন থেকে থানছিগামী জীপ অথবা বাসে করে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রে যেতে হবে। বান্দরবন জীপ ষ্টেশন থেকে জীপ, ল্যান্ড রোভার, ল্যান্ড ক্রুজারসহ অন্যান্য হালকা গাড়ী ভাড়ায় পাওয়া যায়। নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র বান্দরবান জেলা সদর থেকে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যায়। এ ছাড়া বান্দরবান জেলা সদর থেকে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় বেশিরভাগ পর্যটক দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসেন।

এছাড়া ভিআইপিদের সরাসরি অবতরণের জন্য এখানে হেলিপ্যাড রয়েছে।

যাতায়াত ভাড়া

আপনি বিভিন্ন মাধ্যমে নীলগিরি জেতে পারেন। তবে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্ধারিত ৫সিট বিশিষ্ট ছোট জীপ রয়েছে। এর ভাড়া ২৩০০ টাকা। এছাড়া ৮ সিট বিশিষ্ট বড় জীপের ভাড়া ২৮০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন :

বান্দরবানে থাকার জন্য অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেখানে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন। যেগুলোতে থেকে ভাড়ায় এবং নিজস্ব গাড়িতে করে সপরিবারে নীলগিরি ঘুরে আসতে পারবেন। এছাড়াও নীলগিরি রিসোর্টে থাকা-খাওয়ার সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর অফিসার পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার রেফারেন্স লাগবে। কারণ রেফারেন্স ছাড়া নীলগিরি রিসোর্টে কোনো বুকিং নেয়ার নিয়ম নেই ।

নীলগিরি কটেজ ভাড়া

নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রে রাত্রি যাপনের জন্য বান্দরবান সদর সেনা রিজিয়নে বুকিং দেয়া যায়। তাছাড়া নীলগিরি পর্যটন স্পটে গিয়েও সরাসরি বুকিং করা যায়। নীলগিরিতে রয়েছে বেশ কিছু কটেজ। যেমন- ‘গিরি মারমেট’ (ভাড়া-৭৫০০ টাকা, ধারণক্ষমতা-৮/১০ জন); ‘মেঘদূত’ (ভাড়া-৬৫০০ টাকা, ধারণক্ষমতা-৮/১০ জন); ‘নীলাঙ্গনা’ (ভাড়া-৫৫০০ টাকা, ধারণক্ষমতা- ৪/৬ জন)। এছাড়া কাপলদের জন্য ২৭৫০ টাকায় ১ রুম ভাড়া করার সুবিধা রয়েছে।

এছাড়া থাকার জন্য বেছে নিতে পারেন

হিলসাইড রিসোর্ট : বান্দরবান-চিম্বুক সড়কের ৫ কিলোমিটার নামকস্থানে অবস্থিত মিলনছড়ি। এখানে রয়েছে উন্নত পরিবেশে রাত্রি যাপনের সু-ব্যাবস্থা। মোবাইল-১৫৫৬৫৩৯০২২।

হলিডে ইন রিসোর্ট : মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের বিপরীতে ছোট্ট পাহাড়ের চূড়ায় হলিডে ইন রিসোর্ট। এখানে ছোটছোট অনেকগুলো কটেজ রয়েছে। ফোন-০৩৬১-৬২৮৯৬।

হোটেল থ্রি স্টার : বান্দরবান পৌর শহরে অবস্থিত হোটেল থ্রি স্টার। এখানে সপরিবারে রাত্রি যাপনের সু-ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এখানে রুম নয়, ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়া হয়। প্রতিটি ফ্ল্যাটে ৮ থেকে ১৫ জন পর্যন্ত থাকার সুযোগ রয়েছে। নিজেরা রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। মোবাইল-০১৮১৩২৭৮৭৩১।

হোটেল ফোর স্টার : বান্দরবান শহরে অবস্থিত হোটেল ফোরস্টার। এখানে এসি এবং নন এসি দু রকমের রুম রয়েছে। হোটেলের প্রতিটি কক্ষে রয়েছে টেলিভিশন। ফোন-০৩৬১-৬২৪৬৬।

হোটেল রিভার ভিউ : জেলা শহরের মধ্যে সাঙ্গু নদীর পাশ্ববর্তী প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে হোটেল রিভার ভিউ। এখানে নিজস্ব রেস্টুরেন্টও রয়েছে। ফোন-০৩৬১-৬২৭০৭।

মনে রাখতে হবে নীলগিরি যাওয়ার পথে সেনা চেকপোষ্টে পর্যটকদের নাম ও ঠিকানা লিপিবদ্ধ করতে হবে। বান্দরবান জেলা সদর থেকে সাধারণত বিকেল ৫ টার পর নীলগিরির উদ্দেশে কোন গাড়ী যেতে দেয়া হয় না।



আর্কাইভ