বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » বিশ্ববিদ্যালয় | শিক্ষাঙ্গন » ঢাবির হলে ৪ ছাত্রকে নির্যাতন: তদন্ত কমিটি গঠন
ঢাবির হলে ৪ ছাত্রকে নির্যাতন: তদন্ত কমিটি গঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিবির সন্দেহে চার ছাত্রকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন।
অন্যদিকে নির্যাতনের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরী।
রাতে তাকে দেখতে যান শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন। সেখানে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়ে প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা না দেয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মো. মুকিম চৌধুরী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
মুকিমের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান করতে দেখা যায়।
প্রসঙ্গত, গেলো মঙ্গলবার রাতে জুহুরুল হক হলের গেস্টরুমে ছাত্রলীগের নিয়মিত গেস্টরুম চলছিল। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরীকে শিবির সন্দেহে গেস্টরুমে ডাকা হয়।
সেখানে হল শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা তাদের অনুসারীদের দিয়ে মুকিমকে প্রথমে মানসিক চাপ দেয়। এতে স্বীকার না করায় তাকে লাঠি, স্টাম্প ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকে।
পরে তার ফোনের চ্যাটলিস্ট দেখে রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেনকে গেস্টরুমে আনা হয়।
সেখানে তাকেও বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগের নেতারা। মারধর সহ্য করতে না পেরে তারা উভয়েই মেঝেতে বসে ও শুয়ে পড়ে।
এর একটু পর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন ও একই বর্ষের আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীনকে ধরে গেস্টরুমে আনা হয়। সেখানে রাত দুইটা পর্যন্ত তাদের ওপর বিভিন্ন নির্যাতন করতে থাকে ছাত্রলীগ নেতারা।
পরে রাত ২টার পর তাদেরকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
ছাত্রলীগের নেতারা দাবি করে তাদের কাছ থেকে শিবির সংশ্লিষ্ট বই উদ্ধার করা হয়েছে। শিবির সন্দেহে তাদেরকে গেস্টরুমে ডাকা হলেও তাদের কাছে শিবিরের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ বের করতে পারেনি ছাত্রলীগ।